Header Ads

একটু সময় নিয়ে গল্পটা পড়বেন মন খারাপ থাকলে ফ্রেশ হয়ে যাবে।
---------------------------------------------------------------------------------------------
প্রতিদিনের মত আজও ছেলেটি এপ্রন হাতে নিয়ে বাস - স্ট্যান্ড এ দাড়িয়ে বাস এর জন্য ওয়েট করছে।
লিজা আজও তাকে দেখল।
সে মেডিকেল এর স্টুডেন্টদেরকে দুই চোখে দেখতে পারেনা । কেননা, সে নিজে মেডিকেল এ চান্স পায়নি। কিন্তু এই ছেলেটাকে একটু অন্য রকম লাগে তার। অন্যান্য মেডিকেল এর স্টুডেন্টদের কে দেখলে তার মাঝে যেমন বিরক্তি আসে এই ছেলেটিকে দেখলে তেমন বিরক্তি আসে না। বরং এই ছেলেটিকে দেখার জন্যই লিজা প্রতিদিন একই বাস স্ট্যান্ডে আসে। অন্য কোন পথ দিয়ে যাতায়াত না করে এই পথ দিয়েই আসে সে। লিজা মেয়েটা একটু অন্যরকম ছিল। অন্যরকম বলতে, সে এমন ভাব করে যেন প্রেম-ভালবাসার ধারে কাছে সে নেই। কিন্তু মনে মনে সে এক ধাপ এগিয়ে।
বাস স্ট্যান্ডে দাঁড়িয়ে থাকা ওই ছেলেটার নাম ছিল রনি।
রনিও লিজা কে চুপচাপ লক্ষ করত। মাঝে মাঝেই তাদের একে অপরের সাথে চোখাচোখি হত। বাসে রনি যখন দেখত লিজা দাড়িয়ে আছে, আর সে বসে আছে তখন রনি নিজের সিটটাও ছেড়ে দিত। কিন্তু তারা কখনও একে অপরের সাথে কথা বলেনি। এমনকি তারা একে অপরের নামটাও জানতো না। লিজা প্রতিদিন হাজারও বুদ্ধি বের করত, রনির সাথে কথা বলার । কিন্তু কাজের সময় আর বুদ্ধিকে কাজে লাগাতে পারতোনা।
প্রতিদিনের মত আজও লিজা চিন্তা করতে লাগল ব্যাপারটি নিয়ে। যেহেতু লিজা একটু চাপা স্বভাবের , তাই সে এই ব্যাপারে কারও কাছে পরামর্শও করতো না। দুদিন বাদে Valentines Day. সে ঠিক করল ওই দিনে ছেলেটিকে সব বলে দিবে তাঁর হৃদয়ের কথা।
যেই লিজা জীবনে কখনও ফুল কেনেনি, সে Valentines Day দিন সকালে নিজে ফুল কিনতে গেল।
নিজের পছন্দের লাল গোলাপ ফুল হাতে নিয়ে সে বাস স্ট্যান্ড এ দাড়িয়ে আছে ছেলেটির অপেক্ষায়... বেশিরভাগ সময় বাস স্ট্যান্ডে ছেলেটিকেই আগে আসতে দেখা যেত। আগে দেখা না গেলেও ১০ থেকে ২০ মিনিটের মধ্যে চলে আসত। কিন্তু আজ ৪০ মিনিট দাড়িয়ে থাকার পরেও ছেলেটির কোন খবর নেই।
আরও এক ঘন্টা অপেক্ষা করল লিজা।
কিন্তু তাঁর পরেও ছেলেটির কোন দেখা নেই। নিজেকে খুব বোকা বলে মনে হল লিজার। মনে মনে ভাবল... ছেলেটির হয়তো প্রেমিকা আছে। থাকবে না বা কেন। অবশ্যই আছে। মেডিকেলে পড়ে, দুই দিন বাদে ডাক্তার হবে। দেখতেও তো খারাপ নয়। প্রেমিকা থাকবে না বা কেন? Valentines Day দিন প্রেমিকাকে ছেড়ে সে এই বাস স্ট্যান্ডে বা আসবে কেন? ওই দিন লিজা মনে মনে খুব দূঃখ পেল। ঠিক করল আর কোন দিন ওই বাস স্ট্যান্ডে যাবে না।
লিজা আর যায়নি ওই বাস স্ট্যান্ডে । গেলেও অনিচ্ছাকৃত ভাবে। তবে যখন লিজা ওই বাস স্ট্যান্ডের দিকে পার হয়েছে, তখন বাসের অপেক্ষায় দাড়িয়ে থাকা মানুষ গুলোর দিকে তাকিয়ে থেকেছে। কিন্তু রনি কে লিজা আর কোনদিন দেখতে পাইনি।
কিছুদিন পর লিজার বিয়ে ঠিক হল।
বিয়েটি ঠিক করল লিজার মা।
লিজা কোন আপত্তি করে নি। যদিও সে রনি কে ভুলতে পারেনি। বিয়ের পর কিছুদিন ভালই কাটল। তারপর একদিন লিজা তার বরের ঘরে একটি ছবি খুজে পেল। ছবিটি দেখে আঁতকে উঠল লিজা। এটি সেই ছেলের ছবি।
লিজা তার বরের কাছে জানতে চায়...
ছেলেটি কে?
জবাবে তিনি জানান... ছেলেটির নাম রনি। মেডিকেল এ পড়ত। একবছর আগে Valentines Day দিন সে রোড এক্সিডেন্টে মারা যায়। মারা যাওয়ার সময় তার হাতে ছিল একটা লাল গোলাপ ফুল, আর ছিল একটি চিঠি। তার সাথে নাকি প্রতিদিন একটা মেয়ের দেখা হত বাস স্ট্যান্ডে। সে মেয়েটাকে মনে মনে খুব ভালবাসতো, সে তাকে Propose করার জন্যই ওই দিন বাস স্ট্যান্ডে দিকে যাচ্ছিল। দুঃখের বিষয় সে মেয়েটির নাম বলতে পারেনি। কোন ঠিকানাও দিতে পারেনি ।

No comments

Govt’s haste in transferring 1,239 doctors to Covid units

via The Daily Star https://ift.tt/3hICJk0

Powered by Blogger.